বৃহস্পতিবার ৯ অক্টোবর ২০২৫ - ১৭:৫৪
১২ দিনের পবিত্র প্রতিরক্ষা ছিল প্রতিরোধের ইতিহাসে এক মোড় পরিবর্তনের মুহূর্ত

হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন হোসেইনি কুহসারি, সক্রিয় অনলাইন প্রচারকদের সম্মাননা সভায় বক্তব্য রাখেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ১২ দিনের প্রতিরক্ষা কেবল ইরান ও ইসলামী উম্মাহর ভাগ্য নির্ধারণ করেনি, বরং এটি ছিল ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তলাবাদের (ধর্মীয় শিক্ষার্থী) জন্য আত্মসমালোচনা, সক্ষমতা মূল্যায়ন এবং প্রস্তুতির এক অনন্য সুযোগ।

হাওজা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১২ দিনের পবিত্র প্রতিরক্ষা”-তে সক্রিয় অনলাইন প্রচারকদের সম্মাননা অনুষ্ঠানটি কুমে অবস্থিত ইসলামি প্রোপাগেশন অফিসের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র “গাদির”-এ অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন প্রদেশের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং অনলাইন দাওয়াত কার্যক্রমে নিয়োজিত তলাবাগণ।

হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন সাইয়্যেদ মুফিদ হোসেইনি কুহসারি, যিনি হাওজা ইলমিয়ার আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা, তিনি বলেন: ১২ দিনের যুদ্ধের শুরুতেই তলাবাগণ দ্রুত নিজেদের ভূমিকা ও অবস্থান নির্ধারণ করেন। হাওজার জিহাদি দৃষ্টিভঙ্গি ও সময়ো পযোগী ব্যবস্থাপনা তাদের কার্যকর অংশগ্রহণের পথ প্রশস্ত করে।

তিনি আরও জানান, যুদ্ধের প্রথম দিনেই হাওজা প্রশাসন দুটি বিশেষ বৈঠক আয়োজন করে, যাতে যুদ্ধকালীন প্রচার ও দাওয়াত কার্যক্রমের সহায়তা ও দিকনির্দেশনা দেওয়ার পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়।

হোসেইনি কুহসারি বলেন, ১২ দিনের এই প্রতিরক্ষা আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বিগত এক শতাব্দীতে এমন কৌশলগত গুরুত্বের ঘটনা খুব কমই ঘটেছে। একটি দেশ বৈশ্বিক ঔদ্ধত্যের বিপরীতে দাঁড়িয়েছে, ইসরাইলি শাসনব্যবস্থা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঘৃণার প্রতীক হয়ে উঠেছে, এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্র ও প্রতিরোধ ফ্রন্ট দৃঢ়তার প্রতীক হিসেবে নিজেদের অবস্থান প্রতিষ্ঠা করেছে। এই যুদ্ধ ইরানের ঐক্য ও সমগ্র ইসলামী উম্মাহর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করেছে।

তিনি যোগ করেন, এই প্রতিরক্ষা ছিল আমাদের সক্ষমতা যাচাই, দুর্বলতা শনাক্ত এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের এক মূল্যবান সুযোগ। আমাদের উচিত, নিজেদের শক্তি ও দুর্বলতাকে বিবেচনা করে বাস্তবসম্মত কৌশল ও প্রতিরোধমূলক পরিকল্পনা তৈরি করা।

কুহসারি আরও বলেন, পবিত্র কুরআনের ‘নাসর’ ও ‘ফাতহ’ সূরাগুলো চ্যালেঞ্জপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করে। অনলাইন মাধ্যমে সক্রিয় তলাবাগণকে এই কুরআনিক শিক্ষাগুলো কাজে লাগিয়ে সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব হ্রাস করতে হবে এবং আল্লাহর অনুগ্রহগুলো সমাজে প্রচার করতে হবে।

তিনি গণমাধ্যম কার্যক্রমে কৌশলগত ও দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন: অনলাইন মাধ্যমে সক্রিয় তলাবাগণকে শুধুমাত্র স্বল্পমেয়াদি কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। শিল্প, সৃজনশীলতা এবং আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরির মাধ্যমে তাদের প্রভাব বাড়াতে হবে। পাশাপাশি লক্ষ্যভিত্তিক নেটওয়ার্ক গঠন ও সমাজে ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখাও অত্যন্ত জরুরি।

শেষে তিনি আশা প্রকাশ করেন, আল্লাহ তাআলা যেন তলাবাগণের এই গুরুত্বপূর্ণ দাওয়াতি ও তথ্য প্রচার কার্যক্রমকে কবুল করেন এবং তাদের সমাজসেবার পথ আরও সহজ ও ফলপ্রসূ করে দেন।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha